শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

" চুমু যে আর চাচ্ছি না "



১.
তোমায় নিয়ে ভাবনা আমার
যত শত যাতনা
চুমুর উপরে এবার
কিছু একটা হোক না !
২.
কত নেতা-কেতা মিলে
করলো হরিলুট
আমার বেলায় তুমি শুধু
চুপ রে চুপ রে চুপ !...
৩.
সেতু হলো সেতু গেলো
কত শত কথা হলো
কত জনে উপরে উঠলো
আমার বেলায় তুমি শুধু আহা-উঁহু কেন করো !
৪.
তোমার লাল ঠোঁটের চুমুর জন্য
হাজার কোটি খানেক টাকার অস্ত্র এলো
আর আমার চাকরির বায়োডাটা-খানি
বাতিল ফাইলে চলে গেলো !
৫.
তোমার বাঁক-নেওয়া কোমর যখন
দেখে পাড়ার মাস্তান-টোকাইয়ে
তুমি তখন বাকা ঠোঁটে হাসি মারো টেনে -
শুধু আমার বেলায় অসভ্য-ইতর গালি ছুড়ে দেও কেমনে !
৬.
থাকবো না আর এই ভবে
যাবো অচিন দেশে
তোমার কাছে পাওনা চুমুর খাতাখানি
খুলবো রোজ কেয়ামতে !


                                                                                                                                               ১৪-০৯-১৩ । পাবনা । 

বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৩

আমার শহর



পোড় খাওয়া এই শহরে
ছুটে চলা অবিরত
হাজারো মুখের পাশে মুখ লাগানো
তবু যেন ভুলা যায় দম না ফেলতেই !   

শুধু ভুলা যায় না -
শহরের ক্লান্ত দুপুর গুলো
রাস্তার ধারে কোনো প্রাচীন
ভাঙা ইটের দেয়াল আর তাঁর পাশে
ছন্নছাড়া ভাবে গজিয়ে উঠা
কিছু লতা গুল্মের অবিরত চেষ্টা
সবুজের সমারোহে ডুবিয়ে দিব শহর ।

চারিদিকের হাহকার বাড়ছে, বাড়ছে মনের বিষাদ
বিষাক্ত ফনা নগ্নভাবে উন্মোচিত করে
ফেলা হচ্ছে আজি এই শহরের আনাচে কানাচে ।  
কি নিষ্ঠুর ভাবে একদিকে সে নিজেকে করছে অমরাবতী -
আবার অন্য দিকে স্ব’যত্নে খোলা রেখেছে বিষকুম্ভের পুরোনো ঢুলী !  

চারিদিকের সব কিছু এক অমোঘ আকর্ষণে
ছুটে চলেছে তাঁর দিকে !
যেন এই শহরের শুভ্র নীলার মাঝে ক্ষণিকের তরে
হারিয়ে যাওয়া আর স্বর্গে অবগাহন করা নয় ভিন্ন কথা !

যদিও স্বর্গ শব্দটা আজকাল সেকেলে এবং নিন্দিত !
ছন্নছাড়া, বাউন্ডুলে প্রাচীন এই শহরে আজি
প্রেমের বড় অভাব !
শহুরে বিষাক্ত সীসার প্রলেপ জড়ানো -
এই হৃদয়ের তল খুঁজে পাওয়া যায় না কিছুতেই !  

                            
                                                                                                      ১০/০৭/১৬/পাবনা

রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৩

এক টুকরো ভালোবাসা

তোমার নত লজ্জিত হাসি দেখেছি
দেখেছি - তোমার নরম লাল ঠোঁটের ঐতিহাসিক আহ্বান
দেখেছি - তোমার কালো আঁখি পাতে দিগন্ত রেখায় মাতাল হওয়ার বাসনা!

শুধু বুঝিনি তোমার মিথ্যা হাসি
বুক চিরে দেখা হয়নি লুকিয়ে থাকা কালো অন্ধকারকে!
শুধু ছিলো এক টুকরো বিশ্বাস
যার উপর দাঁড়িয়ে তুমি কথা না রাখা ধর্ম বিক্রেতার মতো
মিথ্যে বুলি আওড়ে যাচ্ছো অনবরত!

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

"কালের চক্র"


আমার অপ্রশস্ত ঘরের ছোট্ট জানালার পাশে
দুর্গন্ধ যুক্ত শহুরে ড্রেনের ধারে -
আমার মধ্যবিত্ত, ধর্মভীরু মনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে
একটি নিম গাছ দিব্যি বেড়ে উঠেছে।

আমার অবাক বিস্ময় দেখে মিটি মিটি হাসির ঝলক দেয় সে।
আমি দেখছি – তার কৈশোর, তার যৌবন
আমি দেখছি- তার প্রসব কাহিনি, তার নতুন রূপ
আশ্চর্য স্ব-মহিমায় সে ভাস্বর!

চক্রাকারে তার যৌবন ফিরে আসে বারবার ...
গ্রীষ্মের খরতপ্ত মৃদু উষ্ণ বাতাসে তার সরু কচি পাতাগুলো
ঝির ঝির কাপন তুলে চারপাশে;
ছোট ছোট স্বর্ণ-হলুদ ফুলগুলোর যৌবন আয়োজনে
চারদিক হতে ছুটে আসে যত প্রেমিক-ভ্রমরের দল!

আমি অবাক হয়ে এইসব দেখতাম।
বছরের পর বছর আমি আমার মধ্যবিত্তের শিকল
না ছিড়তে পেরে বারবার সে উত্থান-পতন কাহিনি দেখি।
আমার নিরানন্দ উৎসবহীন জীবনে
এই একটি নিমগাছ তার একই কাহিনি নিয়ে
প্রতিবার উপস্থাপিত হয়!

কিন্তু প্রতিবার আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে,
সেই একই বিস্ময়ে আমি আবিভূত হয়ে পড়ি -
তার কচি পাতা, কচি ফুল, কচি ফল
সব কিছুর মাঝে বিশ্বপ্রকৃতির এক আশ্চর্য
নতুন নতুন সুর আমি খুজে পাই প্রতি ক্ষণে ক্ষণে!

দিনে দিনে সে সৌন্দর্যের পসরা বাড়িয়ে চলেছে
পূর্ণ যৌবনবতী নারীর বেশে কুটিল হাসি হেসে সে কটাক্ষ করে!
আর আমি সময় নামক অদৃশ্য বাঁধনে
জড়িয়ে ধীরে ধীরে শুষ্ক হয়ে যাই।
আমার চামড়া গুলো, আমার চুল গুলো তাদের যৌবন হারিয়ে
রসহীন হয়ে পরে থাকে!

মস্তিষ্কের স্মৃতির পাতায় পাতায় ধূলোর আস্তরণ গুলো
আরো বেশি পুরু হয়ে যায়!
জানালার লোহার শিকগুলোয় মরিচা গ্রাস করে নেয়
যেমন আমায় ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দিচ্ছে সময়।

মরিচে পড়া জানালার শিক গলে আমার চোখ যায়
নিম গাছটির উপর!
কেশহীন নারীর মতো সেও আজি শুষ্ক
শীতের অহংকারে তার ডালগুলো আজ নগ্ন।

হিম শীতল বাতাসে সে যেন নুয়ে পড়েছে
কোন এক পুরোহিতের দুর্বোদ্ধ ধর্মবাণী শুনে।
কিন্তু আমি জানি তার এ আত্মসমর্পণ বেশি দিনের নয়
আবার সে যৌবনবতী হয়ে মগ্ন হবে প্রকৃতি লীলায়
বসন্তের ভেলায় আবার সে উড়াবে তার বিজয় কেতন।

ষোড়শী মেয়ের উন্মাদনাময় উচ্ছল হাসির মতো
তার কচি পাতা গুলো আবার অণুরিত হবে ডালে ডালে।

কিন্তু আমার চামড়া গুলো ততদিনে আরো ঝুলে যাবে
যেন কোন পরিত্যক্ত মাকড়শার জাল দেওয়ালে ঝুলে আছে
সময়ের নিষ্ঠুর গ্রাসের খাবার হয়ে
আমি হারিয়ে যাব কালের চিরায়ত গহ্বরে!

আমার মরচে ধরা জানালার শিকগুলো
এক সময় ঝুর ঝুর হয়ে মিলিয়ে যাবে পলকা বাতাসে
কিন্তু তখনো- সেই নিম গাছটি আবারো অমরাবতী হবে!
তার প্রতিটি কোষে কোষে আবারো যৌবন পরিস্ফুটিত হবে
আবারো চারিদিক হতে ছুটে আসবে প্রেমিক ভ্রমরের দল!


০৫-০৬-১৩/পাবনা

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

" স্বপ্ন "



      
                   
                        

                                              তুমি যদি শোন মোর 
                                  হৃদয়ও বাণী
                               তব সুরে আসো মোর
                                  মনেরও বাড়ি
                               গহীন পাথারে তব
                                  বাঁধিব ঘর-
                               সুখের পায়রা তব উড়াব
                                  গোধূলিরও পর !
                       
                                                                           




                                                             পাবনা ২৭/১১/১০

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৩

" এসো হে প্রিয় "



এসো এসো হে প্রিয়
এসো এসো
তোমার হিয়ার মাঝে
লুকাবো আজি
করবো চুরি হৃদয় ।

আকাশ জুড়ে আঁকাবো
আলপনা তোমার কেশ-
হবে তুলির ডানা !

এসো এসো হে প্রিয়
এসো এসো
জোছনা রাতে শিউলি তলে
বসব দুজন বিরহানলে –

লিখব নতুন গান
বাঁধব অমর সুর ।
শিউলি শেষে বকুল তলে
গাথবো মালা কবিতার ছলে
আঁকাবো নতুন দিন তোমার সনে !
                                                                                 পাবনা , ২৭/১১/

" আলেয়া "


                      
                     

                     দূরে তোমার অস্পষ্ট অবয়ব
                     নগ্ন হাত দুটি যেন রাজহাঁসের ডানা
                     আর; নূপুরের ক্ষীণ ঝংকারে
                     পুলকিত আমার সর্বস্ব !

                                   ধীরে ধীরে পৃথিবীর-
                                   সব রুপ ম্লান করে
                                   তুমি আসছ এগিয়ে
                                   তবু এখনো তুমি অনেক দূরে !
                        
                      নূপুরের উচ্ছলিত ক্ষীণ ঝংকারে -
                                                ছুটে যাই
                      তোমার ঐ নগ্ন হাতে  
                      হাত রাখবো বলে ।
                     
                      হঠাৎ বাতাসের গতি থমকে দাঁড়ায়
                      কালো কালো চঞ্চল মেঘে
                      আকাশ ঢেকে যায়
                      প্রকৃতি নিরুৎসব- নিরুত্তর থাকে
                      তাকিয়ে দেখি তুমি নেই !

                      আবার দূরে তোমার অস্পষ্ট অবয়ব
                      চন্দ্রালোকিত রাতে নৃত্যরত
                      অপস্নরীর ন্যয় অজানা পোষাকে ।

                     ছুটে যাই ! ছুটে যাই ! বারবার-
                     কিন্তু আলেয়ার আলোর মত
                     তুমি লুকোচুরি খেলায় মাতো ।
                  
                                         রিক্ত হস্তে শুধু আমি একা
                                         ফিরে আসি আবার-
                                         এই শুন্য নদীর তটে !

                                                                                বীরগঞ্জ-১৪/০৫/০৮

আমার প্রিয় কিছু...

  • রবি ঠাকুরঃ- চোখের বালি, শেষের কবিতা, যোগাযোগ, গোরা, মালঞ্চ, বউ ঠাকুরানীর হাট, রাজর্ষি, নৌকাডুবি, ঘরে-বাইরে, চতুরঙ্গ, দুই বোন, চার অধ্যায়, প্রজাপ্রতির নিবন্ধ, সোনার তরী, গল্প গুচ্ছ সমগ্র, এবং গীতবিতান সমগ্র । - রবীন্দ্রনাথে আমি মনের অব্যক্ত কথা গুলো খুঁজে পাই । রবীন্দ্রনাথ আমাকে প্রশান্তি এনে দেয়, তাঁর গান কবিতা আমার মননে , আমার চিন্তায় বিল্পব ঘটায় । আমার চিত্তের কাছে আবেদন জানায় ।
  • বই- পথের পাচালি, অশনি সংকেত, প্রথম আলো-১,২, সেই সময়, পার্থিব, উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, মেমসাহেব, ময়ূরাক্ষী, জোছনা ও জননীর গল্প, বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়, ন হন্যতে, লা নুই বেঙলি , দেবদাস, পরিণীতা, পল্লি সমাজ, বামুনের মেয়ে, চিত্রনাথ
  • চলচিত্র- অশনি সংকেত, অরণ্যের দিবারাত্রি, মেমসাহেব, টেলিভিশন, মনের মানুষ